,


শিরোনাম:
«» ভুল তথ্যে সংবাদ প্রকাশ করায় এনবিআর সদস্য কায়কোবাদের প্রতিবাদ «» অনন্যা সাহা (স্বাতী) ৩২তম জন্মদিন। «» বৈষম্যবিরোধীদের ওপর অতর্কিত হামলা, আইসিইউতে ২ ছাত্রী «» হিন্দুদের সরকারি চাকরি থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ নিয়ে মুখ খুলল ইউনুসের সরকার, বলল… «» নতুন আঙ্গিকে আরো সু-পরিসরে ব্রাদার্স ফার্নিচার লি: এর শো-রুম এখন বরিশাল «» উদ্যোক্তা হাটের ২০২৪ এওয়ার্ড প্রদান «» উত্তরা ব্যাংকের এমডি রবিউল ইসলামের অপসারণ ও পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন। «» ধর্মনিরপেক্ষতা খারিজের পক্ষে ইউনূস সরকার «» ভন্ডপীর সাঈদ আনোয়ার মোবারকী বাবুর বিরুদ্ধে মানববন্দন ও প্রতিবাদ সমাবেশ। «» গাইবান্ধায় ভুয়া প্রেসক্লাব খুলে কথিত সাংবাদিকরা হেনাস্তা করছে সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারী ও ব্যবসায়ীদের

“মননে, মানসিকতায় পিছিয়ে যাচ্ছে বাঙালি জাতি”

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ বিশিষ্টজনেরা বলেছেন, সাম্প্রদায়িকতাকে লালন করা হচ্ছে। যাঁরা ক্ষমতায় আছেন, তাঁরা আপস করছেন।

বিশেষ প্রতিনিধিঃ দেশে গত ১৩ বছরে অবকাঠামোগত উন্নয়নে প্রচুর অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু বাঙালি জাতি মননে। মানসিকতায় ক্রমেই পিছিয়ে যাচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল রাষ্ট্র হবে সবার। কিন্তু বর্তমান সংবিধান সেটি ধারণ করে না । এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে ১৯৭২ সালের সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে। সংবিধান দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় বিশিষ্টজনদের বক্তব্যে এসব বিষয় উঠে এসেছে। গতকাল শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে “আদিবাসীদের আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে। বাহাত্তরের বঙ্গবন্ধুর সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠা চাই শিরোনামে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয় । সভায় ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত বলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠতার ধুয়া তুলে রাষ্ট্রধর্ম সংবিধানে জিইয়ে রেখে আর যা-ই হোক গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কখনো প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না

মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দলের সরকার এখন ক্ষমতায়। গত ১৩ বছরে তারা দেশের অবকাঠামো ক্ষেত্রে প্রচুর উন্নয়ন, অগ্রগতি করেছে। কিন্তু জাতি হিসেবে মননে-মানসিকতায় বাঙালি ক্রমেই পিছিয়ে যাচ্ছে। এর করুণ পরিণতি মুক্তিযুদ্ধপ্রেমী সক নাগরিক হতাশা ও বিস্ময়ে প্রত্যক্ষ করছে। তিনি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীদের ‘আদিবাসী’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়াসহ ১৯৭২-এর সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে। রানা দাশগুপ্ত বলেন, দেশের রাজনীতিবিদেরা কথায় কথায় বলেন, সংবিধানে সংখ্যাগুরু সংখ্যালঘু বলতে কিছু নেই। বাস্তবতা হচ্ছে, রাষ্ট্রধর্ম শুধু ঐক্যবদ্ধ বাঙালি জাতিসত্তার বিভাজনই টানেনি, ধর্মীয়- জাতিগত সংখ্যালঘুরা কার্যত রাষ্ট্রীয় সংখ্যালঘুতে পরিণত হয়েছে। সংবিধানে সংখ্যাগুরু, সংখ্যালঘু বলতে কিছু নেই—কথাটি আপ্তবাক্যের মতো আগুড়িয়ে রাজনীতিবিদেরা দেশের জনগণের সঙ্গে প্রতারণা ও মিথ্যাচার করছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সভায় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, জিয়াউর রহমান ও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এই দুই জেনারেল অসাংবিধানিক ও অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করার পর তা জায়েজ করার জন্য ধর্মকে ব্যবহার করেছেন। রাষ্ট্রধর্মের সুযোগ নিয়ে ধর্মান্ধ মৌলবাদী শক্তি গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও প্রগতিকে খামছে ধরার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। যে গণতন্ত্রের জন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল, সেটি এখন খুঁজে পাওয়া যায় না বলে মন্তব্য করেন। সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য আবু সাইয়িদ। তিনি বলেন, প্রজাতন্ত্র মানে মালিকানা প্রজাদের। সেই মালিকানা কিন্তু এ দেশে বাস করা হিন্দু, বৌদ্ধ,

১৯৭২ সালের সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীদের ‘আদিবাসী’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি।

খ্রিষ্টানরাও যারা এ দেশে বাস করে, সবার। কিন্তু সেই প্রজাতন্ত্রের এখন কী হাল? সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা ছাড়া প্রকৃত অর্থে গণতন্ত্র, সাম্য, আইনের শাসন, সমতা, সামাজিক মর্যাদা সুনিশ্চিত হতে পারে না বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। তিনি বলেন, এ দেশ প্রত্যেক মানুষের। তিনি স্বাক্ষর না নিরক্ষর, গ্রামে থাকেন না শহরে হিন্দু না মুসলমান, বৌদ্ধ না খ্রিষ্টান, সমতলের নাকি পাহাড়ের কোনো পার্থক্য করা যাবে না। এটিই সংবিধানের মূল চেতনা । সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থন থাকলেই যেখানে সংবিধান পরিবর্তন করা সম্ভব, সেখানে এখনো কেন রাষ্ট্রধর্মের বিধান রয়েছে, সে প্রশ্ন তোলেন নাট্যজন আমুনুর রশীদ। তিনি বলেন, ‘আদিবাসী’ কথাটি বাহাত্তরের সংবিধানে উপেক্ষিত হয়েছিল। এটা নিয়ে অনেক আন্দোলন-সংগ্রাম করার পর সেখানে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী’ ব্যবহার করা হয়। সংবিধানে উল্লেখ করা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের ‘আদিবাসী’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার যে দাবি, তা পূরণ হওয়া কাম্য ছিল। সভায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম বলেন, মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে।

সেখানে রাষ্ট্রধর্ম ফিরে আসা কোনোভাবেই হতে পারে না। এর মধ্য দিয়ে সাম্প্রদায়িকতাকে লালন করা হচ্ছে। যাঁরা ক্ষমতায় আছেন, তাঁরা আপস করছেন। সভাপতির বক্তব্যে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি নিম চন্দ্র ভৌমিক বলেন, সংবিধান ধর্মনিরপেক্ষ করতে ও সেখানে ‘আদিবাসী’ শব্দ যোগ করতে সামাজিক আন্দোলন প্রয়োজন। ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি নির্মল রোজারিও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শই সংবিধানের মূল চেতনা। সেটা নষ্ট করা হয়েছে। এটা সবার জন্য কান্নার হাহাকারের। আরও বক্তব্য দেন, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজল দেবনাথ ও আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ।

Share Button
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।
ঘোষনাঃ